যখন সমগ্র বিশ্ব দারিদ্রতা লইয়া চিন্তাগ্রস্ত হইয়াছিল তখন তাহাদিগকে হস্তে হারিকেন সমেত পথ দেখাইয়াছিলেন ড. মুহম্মদ ইউনুস, ক্ষুদ্র ঋণের জনক। ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রমের মাধ্যমে গোটা বিশ্বকে চক্ষুতে আঙুল দিয়া দেখাইয়াছিলেন কী রূপে দারিদ্রকে জয় করিতে হয়। শিখাইয়াছিলেন কী রূপে দারিদ্রকে জাদুঘরে প্রেরণ করা যায়। তিনিই প্রথম বলিয়াছিলেন - “একদিন আমরা দারিদ্রকে জাদুঘরে প্রেরণ করিব।” কিন্তু তাহার পদ্ধতিতে কতিপয় গন্ডগোল বিরাজমান ছিল। ক্ষুদ্র ঋণের বৃহৎ সুদের জাঁতাকলে পড়িয়া পুরো জাতি যেন ক্রমেই ম্লান হইয়া যাইতেছিল। আর ঠিক এহেন সময় বাংলার বুক চিরিয়া বের হইয়া আসিলেন আরেক সিংহপুরুষ - শ্রী শ্রী অরূপ দাস জেহান।

তিনি বলিলেন, “ক্ষুদ্র ঋণ দরিদ্রদের নিমিত্তে দেওয়া হইবে। উহাতে আবার সুদ কিসের বাপু!” তাই তিনি প্রচলন করিলেন “সুদ বিহীন ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রমের”। সেইখানে যেকোন বয়সের যেকোন শ্রেণীর মনুষ্য বিনা জামানতে ঋণ সুবিধা পাইতে পারে। কথায় রহিয়াছে, Charity begins at home। তাই তিনি তাহার এই কার্যক্রম স্বীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আরম্ভ করিয়াছেন। আপাতত বিশ্বিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিভিন্ন প্রয়োজনে সুদ বিহীন ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করিয়া উনি তাহার ধারণাকে বিস্তার করিয়া চলিতেছেন।

কোন ছাত্রের বান্ধবী হঠাৎ করিয়া একখানা ‘পাখি ড্রেস’ আবদার করিয়া বসিয়াছে, অথচ ছাত্রের নিকট টাকা-কড়ি নাই? কোন সমস্যা নাই। এহেন বিপদে পাশে আসিয়া দাঁড়ায় অরূপ দাস। পোশাক ক্রয় করা বাবদ যাবতীয় অর্থের যোগান দিয়া থাকেন হাসিমুখে। আবার কোন ছাত্র হঠাৎ করিয়া কোন দূরালাপনী কিনিতে চাহিল, অথচ টাকা-কড়ির অভাব? এহেন বিপদেও আগাইয়া আসেন অরূপ দাস। সাধ্যমত ঋণ প্রদান করিয়া মনুষ্যের সাধ-আহ্লাদ পূরণ করিবার এই যে ঝোঁক তাহা কিন্তু সত্যিই বিরল। মদ্দা কথা হইল, যেকোন ছাত্রের যেকোন অর্থনৈতিক দুরাবস্থার সময় সবার আগে যিনি ঋণ সুবিধা লইয়া আগাইয়া আসেন তিনি অরূপ দাস।

তিনি বলিয়াছিলেন, “ড. ইউনুস দারিদ্রতাকে জাদুঘরে প্রেরণ করিবেন। আর আমি উহাকে দেশ ছাড়া করিব।” সেই ভাবনা থেকেই তিনি স্থাপন করিতে চাহিতেছেন অরূপ দাস ব্যাংক (ADB)। আমরা প্রার্থনা করি, একদিন তার ব্যাংক স্থাপিত হইবে। আমরা আশা করি, অরূপ দাসের এই কার্যক্রম একদিন সমগ্র দেশে ছড়াইয়া পড়িবে। আমরা অপেক্ষা করি সেইদিনের যেদিন শ্রী শ্রী অরূপ দাস জেহান দারিদ্র বিমোচনের মাধ্যমে বিশ্বশান্তিতে অবদান রাখিয়া একখানা নোবেল প্রাইজ প্রাপ্ত করিবেন। জয়তু শ্রী শ্রী অরূপ দাস জেহান!