“Every relationship is transactional” - সোলায়মান সুখন ভাইয়ের এই কথাটা আমার খুব পছন্দের। সুখন ভাই বাদেও আরো অনেক জায়গায় এই কথাটা আমি শুনেছি। আর আমি যে ‘থিওরি অব গিভ-এন্ড-টেইক’ বা ’ গিভ-এন্ড-টেইক পলিসি’র কথা বলছি, সেটা ঐ একই গানের ভিন্ন সুর।

সারা দুনিয়া গিভ-এন্ড-টেইক পলিসির উপরে চলে। কারো কাছে কিছু চাওয়ার আগে তাকে আগেই কিছু দিতে হবে আপনার। তখন দেখবেন আপনার চাওয়াটা খুব সহজেই পূরণ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সমস্যাটা হল কোন এক কারণে আমাদের ভিতর দেওয়ার সংস্কৃতিটা চলে গেছে। তার বদলে চলছে নেওয়ার সংস্কৃতি। আমরা চিন্তা করি অমুকে কাছ থেকে কি কি পেয়েছি। কিন্তু মনের ভুলেও ভাবি না অমুককে কি কি দিয়েছি। আর এইজন্যই যত সমস্যা।

আপনার কাছ থেকে আমার হয়ত কোন সাহায্য দরকার। এজন্য আমার উচিত আপনার কাছ থেকে সাহায্য চাওয়ার আগে আপনাকে সাহায্য দেওয়া। হুম, আপনাকে সাহায্য করার মত সুযোগ আমার ইতিপূর্বে নাও আসতে পারে। কিন্তু তারপরও যখন আমি আপনার সাহায্য নিতে যাব তখন আমার উচিত আপনার প্রতি বিনয়ী হওয়া, নম্রতার সাথে কথা বলা, শ্রদ্ধার সাথে আপনার কাছে সাহায্য চাওয়া।

নাহ, আমি অবশ্যই আমার আত্ম-সম্মান বিক্রি করব না। কিন্তু যেহেতু আমার মত একজন অচেনা-অর্বাচীনকে আপনি সাহায্য করবেন, তাই আমার থেকে শ্রদ্ধাবোধ আশা তো করতেই পারেন। আর আপনাকে শ্রদ্ধা করলে আমার আত্ম-সম্মান কমবে না, বরং আমি যখন অন্য কাউকে সাহায্য করতে যাব তখন সেও আমাকে শ্রদ্ধা-ভালবাসা দেবে।

আগে বলেছি, সারা দুনিয়া ‘গিভ-এন্ড-টেইক পলিসি’র উপরে চলে। আজ আমি যদি আপনাকে সম্মান দিই তাহলে কাল আমি হয়ত অন্য একজনের কাছ থেকে সম্মান পাব। আমিই যদি আমার গুরুজনকে সম্মান না দিই তখন আমি কিভাবে আমার চেয়ে বয়সে ছোটদের থেকে সম্মান আশা করতে পারি? নাহ, আমি পারি না। সুতরাং আপনার প্রতি আমাকে আমার বিনয়ের বাহু অবনমিত করতেই হবে।

লেখাটা বেশ বড় হয়ে গেল। আসলে নিজেই নিজেকে অনেক কিছু শেখালাম। আবার ঝিঁকে মেরে বউকেও কিছু কিছু জিনিস শেখালাম। এটাই অবশ্য লেখার মূল উদ্দেশ্য।